অবিভক্ত বাংলার প্রথম জেলা যশোর

 

 

যশোর জেলাটি আমাদের দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল এর একটি অঞ্চল, এটি খুলনা বিভাগের অন্তর্গত একটি জেলা। আয়তনে এ জেলাটি প্রায় ২৬০৬.৯৪ বর্গ কিমি। 

যশোরের পশ্চিমে রয়েছে ভারত, পূর্বে রয়েছে নড়াইল জেলা, দক্ষিনে অবস্থিত খুলনা জেলা এবং উত্তরে অবস্থিত যথাক্রমে ঝিনাইদহ ও মাগুরা জেলা।

টিশ ভারতের অবিভক্ত বাংলার প্রথম জেলা যশোর, বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে প্রথম স্বাধীন হওয়ার গৌরব বুকে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে এই যশোর জেলা।

 যশোর নাম করণীয় কিছুটা মতভেদ রয়েছে,কারো মতে যশোহর থেকে যশোর আবার কার মতে আরবী যছর থেকে যশোর।যার অর্থ সেতু বা সাঁকো,তবে ঐতিহাসিকদের মতে,গৌড়ের রাজাকে স্মরণ করে রাজা বিক্রমাদিত্য যে রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেন সেই যশোর থেকে যশোর নামের উৎপত্তি হয়েছে

 


।1555 খ্রিস্টাব্দে বর্তমান যশোর খুলনা কুষ্টিয়া বনগাঁ এবং ফরিদপুরের কিছু অংশ নিয়ে প্রতিষ্ঠিত হয় যশোর রাজ্য, 1747 সালে যশোর নাটোরের রানী ভবানীর রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত হয়,তবে 1781 সালে ব্রিটিশ শাসকগণ যশোরকে জেলা হিসেবে ঘোষণা করেন,

1787 সালে এখানে নির্মিত হয় দৃষ্টি নন্দন স্থাপত্য অনন্য নিদর্শন যশোর কালেক্টটর ভবন। এটি ছিল সে সময় বাংলার দীর্ঘতম ভবন,মূল কাঠামো নান্দনিক সৌন্দর্য অক্ষুন্ন রেখে ,1982 সালে এটিকে দোতালায় রূপান্তর করা হয়. বর্তমানে এটি জেলা প্রশাসকের কার্যালয় হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে,

যশোর কে বলা হয় দেশের প্রথম ডিজিটাল জেলা, 20 শে ডিসেম্বর 2012 সালে যশোর কে প্রথম ডিজিটাল জেলা হিসেবে ঘোষণা করেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বেগম শেখ হাসিনা,যশোর জেলার এক মহা গৌরব এর নাম মাইকেল মধুসূদন দত্ত,যাকে বাংলা সাহিত্যের সনেট এবং অম্রিতাক্ষর ছন্দের প্রবর্তক বলা হয়, তিনি প্রথম বাংলা ভাষার মহাকাব্যের রচয়িতা,


 


 

এছাড়াও জ্যোতির্বিজ্ঞানী রাধা গোবিন্দ চন্দ্র,খ্যাতিমান অভিনেতা ও লেখক ধীরাজ ভট্টাচার্য, শিক্ষাবিদ অধ্যাপক শরীফ হোসেন, বিপ্লবী শিশির কুমার ঘোষ, সাহিত্যিক মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান, গীতিকার মোহাম্মদ রফিকউজ্জামান,অভিনেতা রিয়াজ, অভিনেত্রী ববিতা, সুচন্দা, চম্পা,সন্ধ্যা রায়, শবনুর ,সঙ্গীত পরিচালক প্রণব ঘোষ প্রমুখ, যশোর জেলায় জন্মগ্রহণ করেন,যশোর জেলার দর্শনীয় স্থান গুলোর মধ্যে একটি হলো হল মুক্তিযুদ্ধে অসামান্য বীরত্ব প্রদর্শন করে সম্মুখ যুদ্ধে খানজাহান আলীর দিঘীসহ পিকনিক কর্নার প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন ভরত ভায়না, মির্জানগর, হাম্মামখানা সহ আরো অনেক দর্শনীয় স্থান রয়েছে,যশোর সবজি চাষের জন্য অনেক আগে থেকেই বিখ্যাত হলেও স্বাধীনতার পর এর সাথে যুক্ত হয়েছে ফুলের চাষ।
বাংলাদেশের প্রধানতম আন্তর্জাতিক স্থলবন্দর বেনাপোল বন্দর।এটি যশোর জেলারি  শার্শা উপজেলায় অবস্থিত। বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার সম্পাদিত বাণিজ্যিক আয়ের 90 শতাংশই  আসে এই স্থলবন্দরের মাধ্যমে,এছাড়াও যশোরের মনিরামপুর উপজেলার রাজগঞ্জ বাজারে সাথে  ঝাপা গ্রাম।
ঝাপা বাওর হয় অনেকদিন ধরে গ্রামবাসীকে নৌকাই পার হয়ে রাজগঞ্জ বাজারে আসতে হতো, তাই গ্রামবাসীর দুর্ভোগ লাঘবে ঝাপা গ্রাম উন্নয়ন ফাউন্ডেশন নামের সংগঠনের সদস্যদের স্বেচ্ছা শ্রম। নিজেদের অর্থায়নে প্রায় 50 লক্ষ টাকা ব্যয়ে অসম্ভবকে সম্ভব করে নির্মিত হয়েছে দেশের একমাত্র ভাসমান সেতু,যা ইতিমধ্যে অনেকের দৃষ্টি কেড়েছে, 13০০ ফুট দীর্ঘ ভাসমান সেতু তৈরিতে ব্যবহার করা হয়েছে প্লাস্টিকের ব্যারেল ও লোহার শিক ,এছাড়াও শিল্প সংস্কৃতি ইতিহাস ঐতিহ্য খেলাধুলাসহ সব ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে যশোর। অবিভক্ত বাংলার প্রথম জেলা, প্রথম কালেক্টরেট ভবন,স্বাধীনতা যুদ্ধে প্রথম মুক্ত জেলা, প্রথম মহাকাব্য রচয়িতা, বাণিজ্যিকভাবে প্রথম ফুল চাষের জেলা, এমনকি দেশের প্রথম ডিজিটাল শহরসহ,এমনই প্রথম অনেক কিছুই এই যশোর জেলার সঙ্গে যুক্ত, তবে যশোর জেলা খেজুরের রসের জন্য বিখ্যাত 

যে কারনে বিখ্যাত! 


যশোর জেলা খই, খেজুর গুড় ও জামতলার

মিষ্টির জন্য বিখ্যাত।

তাছাড়া যশোর জেলাটিকে বাংলাদেশের ফুলের

রাজধানী বলা হয়।

জেলার ১০টি বিখ্যাত বা দর্শনীয় স্থান:- 

বেনাপোল স্থল বন্দর

ভাতভিটা

মীর্জানগর হাম্মামখানা

মাইকেল মধুসূদন দত্তের বাড়ী

ফুলের হাট গদখালি

হাজী মুহাম্মদ মহসিনের ইমমবাড়ী

বাঘানায়ে খোদা মসজিদ

পুড়াখালী বাওড়

খড়িঞ্চা বাওড়

বুকভরা বাওড়

,

মোট ৮টি উপজেলা নিয়ে এ জেলাটির প্রশাসনিক

কার্যক্রম বিস্তৃত। 

যশোর জেলাটিতে রয়েছে: 

উপজেলা   ৮ টি

পৌরসভা   ৮ টি

ইউনিয়ন   ৯৩ টি

গ্রাম   ১৪৭৭ টি

মৌজা   ১০৩৬ টি

থানা   ৯ টি

পুলিশ ফাড়িঁ   ৩৫ টি

মোট সীমান্তের দৈর্ঘ্য   ১৪২ কিলোমিটার

বিডিআর ক্যাম্প   ১৮ টি

মসজিদ   ২,৮৮৮ টি

মন্দির   ৩৩৯ টি

গীর্জা   ১৪ টি 


Leave a Reply

x